বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির ফার্সেসি বিভাগের যৌন সংখ্যালঘু সমকামী সম্প্রদায়ের এক শিক্ষককে ছাত্রদের সমকামিতার প্রস্তাব দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
একই সাথে উক্ত ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক জড়িত অপরাধীকে বিচারে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোড় দাবী জানিয়েছে জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ ।
গত ২৬ মে ২০২২ খ্রীষ্টাব্দ তারিখে অনলাইন পত্রিকা বিডিনিউজ২৪ ডট কম এ প্রকাশিত খবর আনুযায়ী জানা যায় বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির ফার্সেসি বিভাগের চুক্তিভিত্তিক এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রদের সমকামিতার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উক্ত ঘটনায় যৌন প্রবৃত্তিগত সংখ্যালঘু সমকামী শিক্ষক মিজানুর রহমানকে প্রথমে হোস্টেলের সহকারী সুপার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইনস্টিটিউট থেকেও সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগের বিষয়টি তদন্তে ইন্সট্রাক্টর আব্দুস সাত্তারকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।
উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, তিনি কিছু করেনি। তার আইডি হ্যাক করা হয়েছিল। থানায় জিডিও করেছে।তার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।
জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ও সমকামী অধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম সৈকত শুধুমাত্র যৌন প্রবৃত্তিগত সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে একজন শিক্ষককে মিথ্যা অভিযোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সাম্যিক অব্যাহতি প্রদানের তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
পাশাপাশি শুধুমাত্র যৌন সংখ্যালঘু সমকামী হওয়ার কারণে ছাত্রদের প্ররোচিত করে উল্লেখিত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়ার ঘটনা লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য মূলক এবং জাতিসংঘ ঘোষিত মৌলিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন বলেই অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত মনে করতেন।
অ্যাডভোকেট শাহনূর ইসলাম সৈকত মনে করেন উল্লেখিত ঘটনাগুলো বাংলাদেশে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং সারা বাংলাদেশে যৌন প্রবৃত্তিগত সমকামী সংখ্যালঘুর উপর সংঘটিত বৈষম্য, হত্যা, আঘাত ও মানবাধিকার লংঘন বিষয়ের একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র।
সারা বাংলাদেশে পরিবার থেকে সমাজ এবং সমাজ থেকে কর্মস্থল ও রাষ্ট্র সর্বত্র যৌন প্রবৃত্তিগত সমকামী সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত বৈষম্যসহ বিভিন্ন ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হলেও সামাজিক অগ্রহণযোগ্যতা ও অসহিষ্ণুতার কারণে সেসব ঘটনার অধিকাংশ জনসম্মুখের অগোচরে রয়ে যাচ্ছে বলে অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম সৈকত মনে করেন।
পরিশেষে, অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম যৌন সংখ্যালঘু সমকামী ব্যক্তিদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করে দন্ডবিধির ৩৭৭ ধারা বাতিল ও তাদের সুরক্ষা প্রদানের জন্য সমকামী সুরক্ষা আইন প্রণয়নের জোড় দাবী জানিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment